On This Page
জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র - দাঁদরোগ

দাঁদরোগঃ দাঁদরোগ বা ডার্মাটোফাইটোসিস এক ধরনের ছোঁয়াচে ছত্রাকঘটিত চর্মরোগ। আক্রমনের জন্য দায়ী ছত্রাক ত্বকে উপস্থিত ক্রোটিন (Keratin) নামক প্রোটিন আহার করে। মধ্যখানে দৃশ্যমান সুস্থ ত্বকসম্পন্ন চুলকানিময়,  বৃত্তাকার ফুসকুড়ি (rash)-র উপস্থিতি দ্বারা দাপ শনাক্ত করা যায়। ত্বকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বৃত্তাকার এই উপসর্গের জন্য ওয়ার্স (ring worm) নামকরণ করা হয়েছে (যদিও এটি worm দ্বারা সংঘটিত রোগ নয়)। দাদ রোগ সব বয়সের গ্রহেরই হতে পারে, তবে শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে এর সংক্রমণ ও বংশবৃদ্ধির ফলে এ তার সৃষ্টি হয়।

রোগের কারণ : তদি ছত্রাকঘটিত রোগ। উদ্ভিদ পরজীবী দ্বারা সংঘটিত হয় বলে চিকিৎসাশাস্ত্রে একে Tinea বলে। আকাশে ক্ষেত্রেই Trichophyton (T. rubrihi T. verrucosum) নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে। তাই Tinea trichophytina বা Trichophytosis নামেও পরিচিত। এছাড়া Microsporum (M.cans), alermophyton (E. floccosum)) গণের ছত্রাক দিয়েও দাদরোগ হতে পারে।

রোগের সংক্রমণ : সাধারণত ঘামে ভেজা শরীর, অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন শরীর, দীর্ঘ সময় ভেজা থাকে এমন শরীর, দিন। সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার ৩-৫ দিন পর রোগ লক্ষণ প্রকাশ পায়। দেহের যে কোনো অংশেই দাদরোগ পারে, তবে মুখমণ্ডল এবং হাতে অধিক দেখা যায়। ঊরু, মাথার খুলি, নখ ইত্যাদিও আক্রান্ত হয়। মাথার খুলির রোগ অপেক্ষাকৃত মারাত্মক। আক্রান্ত স্থানের নামানুসারে ডাক্তারি পরিভাষায় দাদরোগটি ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত।

রোগের লক্ষণঃ

* চামড়ায় ছোট ছোট লাল বৃত্তাকার ফুসকুড়ি (rash) দেখা যায়।
* আক্রান্ত স্থানে এটি প্রায়শই রিং-এর মত গঠন সৃষ্টি করে। মাঝে মাঝে লাল ক্ষতের সৃষ্টি হয়; ক্ষতের সুনির্দিষ্ট।
* কখনও কখনও ত্বকে প্রচণ্ড চুলকানি হয়। চুলকানোর পর আক্রান্ত স্থানে জ্বালা হয় এবং আঠালো রস বেরোয়।
* মাথায় হলে স্থানে স্থানে চুল উঠে যায়, নখে হলে দ্রুত নখের রং বদলায় এবং শুকিয়ে খন্ড খন্ড হয়ে ভেঙ্গে যায়।

প্রতিকারঃ
* চামড়া পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখতে হবে।
* সুতির মোজা ও অন্তর্বাস ব্যবহার করতে হবে। অন্যকারো ব্যবহৃত পোষাক, তোয়ালে, চিরুনী ব্যবহার করা যাবে না।
* গোসলের পর ভালোভাবে শরীর মুছতে হবে। পোশাক ও অন্তর্বাস যথাসম্ভব ঢিলেঢালা পড়তে হবে।
* বিছানার তোষক, চাদর ও কাপড় কিছুদিন পরপর
পরিষ্কার করতে হবে।
* মাথার ত্বকে দাদে আক্রান্ত ব্যক্তির চিরুনী, কাঁচি জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। 
* পায়ের আঙ্গুলে আক্রমণ এর ক্ষেত্রে  আক্রান্ত স্থানে ছত্রাকনাশক পাউডার বা ক্রীম যাতে Miconazole, Clotrimazolo-এর মত উপাদান আছে। এগুলো লাগানো যেতে পারে।
* এমন কাপড় পরা উচিত নয় যা আক্রান্ত স্থানে ঘসা লাগে ও অস্বস্তি বোধ হয় । আক্রান্ত হলে প্রত্যেকদিন রাতের কাপড় ও বিছানা পরিষ্কার করতে হবে। - আক্রমণ বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শে ছত্রাকনাশক ক্রিম ব্যবহার ও পিল সেবন করা যেতে পারে।

Content added By

Promotion